রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন
শরিফা বেগম শিউলী- রংপুর বিভাগীয় ব্যুরোচীফঃ
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৬০১ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। অপরদিকে দলীয় মনোনয়ন পেলেও ভোট যুদ্ধে আনারস প্রতীকে ৪৮৪ ভােট পেয়ে হেরে যান রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ। পূর্ব নির্ধারিত তফশিল অনুযায়ী সোমবার ১৭ই অক্টোবর ২২ইং সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারে ১০৯৫ জন ভোটারের মধ্যে ১০৮৫ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। জেলার একটি সিটি কর্পোরেশন, তিনটি পৌরসভা, আটটি উপজেলা পরিষদ ও ৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন, আটটি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ২৯ জন ও তিনটি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অন্যান্য নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনে জনসাধারণের ভোটাধিকার না থাকলেও ছিল বেশ আগ্রহ। কে হবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, তা নিয়ে চলে নানা বিচার-বিশ্লেষণ। দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক হলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে তারা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নানা জল্পনা-কল্পনা কাটিয়ে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইলিয়াস হোসেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু। এর আগে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয় মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুকে।
রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন- জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। গোপন কক্ষ থেকে শুরু করে কেন্দ্রভিত্তিক যে নির্দেশনা ছিল, তা ভোটার ও প্রার্থীদের জানানো হয়। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করার ফলে ঢাকা থেকে নির্বাচন কমিশন জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ মনিটরিং করেন। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যেকটি দিকনির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করে সকলের সহযোগিতায় আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি।
উল্লেখ্য, ২০০০ইং সালে তৎকালীন সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করেন। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে। এরপর প্রথমবারের মতো স্থানীয় এই সরকারে নির্বাচন হয় ২০১৬ইং সালের ২৯শে ডিসেম্বর।